নামাজের সময় প্যান্ট বা শার্ট হাতা কাপড় গুটানো কি বৈধ?
প্রশ্নঃ-
নামাজের সময় প্যান্ট বা শার্ট হাতা কাপড় গুটানো কি বৈধ?
উত্তরঃ
আল্লাহর রসূল (সাঃ) বলেন, “আমি আদিষ্ট হয়েছি যে, আমি ৭ অঙ্গ দ্বারা সিজদাহ করি --- এবং কাপড় ও চুল না গুটাই।” (বুখারী, মুসলিম, ইবনে খুযাইমাহ্, সহীহ ৭৮২, জামে ১৩৬৯ নং)
মুহাদ্দিস আলবানী (রহঃ) বলেন, ‘এই নিষেধ কেবল নামায অবস্থাতেই সীমাবদ্ধ নয়; বরং নামাযের পূর্বেও যদি কেউ তার চুল বা কাপড় গুটায় অতঃপর নামাযে প্রবেশ করে, তাহলে অধিকাংশ উলামাগণের মতে সে ঐ নিষেধে শামিল হবে। আর চুল বেঁধে নামায পড়া নিষিদ্ধ হওয়ার হাদীস উক্ত মতকে সমর্থন করে। (সিফাতু স্বালাতিন নাবী (সাঃ), আলবানী ১৪৩পৃ:)
এখান থেকেই বহু উলামা বলেছেন যে, জামার আস্তীন বা হাতা গুটিয়ে নামায পড়া মাকরুহ। কারণ মহানবী (সাঃ) ও তাঁর উম্মত নামাযে কাপড় না গুটাতে আদিষ্ট হয়েছেন। আর জামারহাতা গুটানো কাপড় গুটানোরই শামিল।
ইমাম নওবী বলেন, উলামাগণ এ বিষয়ে একমত যে, কাপড় বা জামার আস্তীন গুটিয়ে, চুল বেঁধে বা পাগড়ীর নিচে গুটিয়ে রেখে নামায পড়া নিষিদ্ধ। অবশ্য এই নিষেধের মান হল মাকরুহ। অর্থাৎ, এতে নামায নষ্ট হয় না। (শারহু মুসলিম ৪/২০৯, আউনুল মা’বূদ ২/২৪৭)
উক্ত নিষেধের কারণ বর্ণনায় অনেকে বলেন যে, কাপড় গুটানো বা তোলা অহংকারীদের লক্ষণ। তাই তাদের সাদৃশ্য অবলম্বন নিষিদ্ধ। (ফাতহুল বারী, ইবনে হাজার ২/৩৪৬)
অবশ্য কাপড় খুলে গেলে তা পরা উক্ত নিষেধের আওতাভুক্ত নয়। বরং লজ্জাস্থান খুলে যাওয়ার আশঙ্কা হলে তো নামায অবস্থাতেও পরা ওয়াজেব। অনুরুপ উলঙ্গ নামাযী নামাযের মাঝে যদি কাপড় পায়, তাহলে সেই অবস্থাতেই তার জন্যও তা পরা ওয়াজেব। কারণ, কাপড় বর্তমান থাকতে লজ্জাস্থান বের করে নামায পড়লে নামায বাতিল। (আলমুমতে’, শারহে ফিক্হ, ইবনে উষাইমীন ৩/৩৪৭-৩৪৮)
নামায পড়তে পড়তে খুব শীত লাগলে এবং পাশে কাপড় থাকলে নামাযী নামাযের মধ্যেই তা পরতে বা গায়ে নিতে পারে। কারণ না পরলে তার মনোযোগে ব্যাঘাত ঘটবে। (ঐ ৩/৩৪৮) অনুরুপ খুব গরম লাগলেও অতিরিক্ত ও অপ্রয়োজনীয় কাপড় নামায অবস্থাতেই সরিয়ে ফেলতে পারে।
উত্তর দিয়েছেন শাইখ আবদুল হামিদ ফাইজী আল মাদানী

Post a Comment