গায়েবানা জানাযা কখন পড়া যাবে আর কখন যাবে না




গায়েবানা জানাযা কখন পড়া যাবে আর কখন যাবে না
▬▬▬ ◈◉◈▬▬▬
প্রশ্ন: গায়েবানা জানাযাার সালাত আদায় করা বৈধ কি?

উত্তর:
🔹 যদি কোন মৃত ব্যক্তির জানাযা না হয়ে থাকে-যেমন, কোন ব্যক্তি অমুসলিম দেশে মৃত্যু বরণ করেছে-যেখানে জানাযা দেয়ার মত কোন মুসলিম ছিলো না বা কোন ব্যক্তি সাগরে ডুবে মারা গেছে এবং তার লাশ পাওয়া যায় নি বা হিংস্র প্রাণী তাকে খেয়ে ফেলায় জানাযা করা সম্ভব হয় নি-তাহলে এ সব ক্ষেত্রে তার গায়েবানা জানাযা পড়া জায়েয আছে। এ ব্যাপারে ওলামাদের মাঝে কোন দ্বিমত নেই।

কিন্তু যদি একবার জানাযা হয়ে থাকে তাহলে তার গায়েবানা জানাযা পড়া যাবে কি না এ বিষয়টি দ্বিমত পূর্ণ। যথা:
🔹 অনেক আলেমের মতে, একবার জানাযা হলে তার গায়েবানা জানাযা পড়া যাবে না। কিন্তু মৃত ব্যক্তি যদি এমন হয় যার দ্বারা ইসলাম ও মুসলিমদের কল্যাণ সাধিত হয়েছে (যেমন বিখ্যাত কোন দাঈ, আলেম, মুজাহিদ বা মুসলিম রাজা বা শাসক ইত্যাদি) তাহলে এ শ্রেণী ব্যক্তিদের গায়েবানা জানাযা পড়া জায়েয আছে; অন্যদের নয়।
🔹 আর একদল আলেমের মতে, একবার জানাযা হলে পুনরায় গায়েবানা জানাযা পড়া যাবে না। কিন্তু যদি জানাযা না হয়ে থাকে তাহলে পড়া যাবে।

সকল পক্ষই রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কর্তৃক হাবশা বা ইথিউপিয়ার বাদশা নাজাশীর গায়বানা জানাযা পড়ার হাদিসকে দলিল হিসেবে পেশ করে থাকেন।

যাহোক,
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জীবনে মাত্র একজন ব্যক্তির গায়েবানা জানাযা পড়েছেন। তিনি হলেন, হাবশার বাদশাহ নাজাশী। তিনি একজন খৃষ্টান রাজা ছিলেন। পরে ইসলাম গ্রহণ করে ইসলামের অনেক খেদমত করেছিলেন। পরবর্তীতে তিনি সে দেশেই মারা যাওয়ায় সেখানে তার জানাযা হয় নি। বিধায় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মদিনায় সাহাবীদেরকে নিয়ে তার গায়েবানা জানাযা আদায় করেছিলেন।
এ ছাড়া বহু সাহাবী ইসলামের দাওয়াত ও জিহাদে গিয়ে দূর-দূরান্তে মৃত্যু বরণ করেছেন কিন্তু তিনি আর কখনো কারো গায়েবানা জানাযা পড়েছেন বলে হাদিস পাওয়া যায় না।
এ কারণে একদল আলেম বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কেবল নাজাশীর গায়েবানা জানাযা পড়েছিলেন এর-কারণ হল, খৃষ্টান দেশে মারা যাওয়ায় কেউ তার জানাযা পড়ে নি। সকল শ্রেণী মৃত ব্যক্তির জন্য পড়া বৈধ হলে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অন্য সাহাবীদের -যারা দূর দূরান্তে মারা গেছেন- তাদেরও তিনি গায়েবানা জানাযা পড়তেন। কিন্তু তা করেন নি।
এতে প্রমাণিত হয়, যার জানাযা হয়েছে তার পুনরায় গায়েবানা জানাযা পড়া ঠিক নয়। দলীল ও যুক্তির নিরিখে এটি অধিক সঠিক মত বলে প্রতিয়মান হয়।

এ মতটিকে পছন্দ করেছেন শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া, তার ছাত্র ইবনুল কাইয়েম এবং পরবর্তী যুগের আলেমদের মধ্যে শাইখ উসাইমীন প্রমূখও এর দিকেই ধাবিত হয়েছেন।

তবে বড় আলেম, রাজা-বাদশাহর পুনরায় গায়েবানা জানাযা পড়ার মতটিকেও অনেক আলেম শক্তিশালী বলেছেন। তাদের মতেও পক্ষে ঐ নাজাশীর গায়েবানা জানাযার হাদিস। কারণ রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এমন একজন ব্যক্তির গায়েবানা জানাযার পড়েছেন যিনি ছিলেন ইসলামের খেদমতকারী একজন মহান বাদশাহ। এ মতের পক্ষে সৌদি আরবের স্থায়ী ফতোয়া কমিটি ফতোয়া প্রদান করেছেন।

যাহোক, বিষয়টি দ্বিমতপূর্ণ। কিন্তু দলীলের আলোকে ৩য় মতটি অধিক শক্তিশালী মনে হয়। অর্থাৎ একবার জানাযা হলে আর গায়েবানা জানাযা পড়া ঠিক নয়।

তবে কেউ যদি অন্য মত অনুসরণ করে গায়েবানা জানাযা পড়ে তাহলে তাকে বিদআত বা শরিয়া বিরোধী বলার কোন সুযোগ নাই। আল্লাহু আলাম।
▬▬▬ ◈◉◈▬▬▬
উত্তর প্রদানে:
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল মাদানী
দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ এন্ড গাইডেন্স সেন্টার, KSA
fb/AbdullaahilHadi

https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=612876555798560&id=235040300248856

Post a Comment

[blogger][facebook][disqus]

MKRdezign

Contact Form

Name

Email *

Message *

Powered by Blogger.
Javascript DisablePlease Enable Javascript To See All Widget