ইচ্ছাকৃতভাবে বা অলসতাপূর্বক নামাজত্যাগীর বিধান কি?
⚠ইচ্ছাকৃতভাবে বা অলসতাপূর্বক নামাজত্যাগী কি এর পরেও সাবধান হবে না?⚠
ইচ্ছাকৃতভাবে বা অলসতাপূর্বক নামাজ ত্যাগকারী যে কতবড় জঘন্য অপরাধে নিমজ্জিত এবং সে যে কতবড় মন্দভাগ্য তা আমরা নীচে আমাদের প্রিয় নবী মুহাম্মদ (সঃ) এর উক্তি এবং প্রসিদ্ধ চার ইমামের মতামতের আলোকে তুলে ধরার প্রয়াস পাবো ইন শা আল্লাহ।
🔷প্রথমত: ইচ্ছাকৃতভাবে বা অলসতাপূর্বক নামাজ ত্যাগকারীর বিষয়ে নবী (সঃ) কঠোর হুঁশিয়ার বানী:-
1⃣বিখ্যাত সাহাবী জাবের (রাযিঃ) বলেন যে, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে বলতে শুনেছি, ব্যক্তির এবং শিরক ও কুফরের মধ্যে পার্থক্য হচ্ছে সালাত ছেড়ে দেয়া।
➡দেখুন: ছহীহ মুসলিম, হাদীছ নং(৮২)।
2⃣বিখ্যাত সাহাবী যাবের (রাযিঃ) হতে বর্ণিত তিনি বলেন, নবী (সঃ) বলেছেন: (( কুফুরি এবং ইমানের মধ্যে পার্থক্য কারী হল নামাজ ত্যাগ))।
➡দেখুন: সুনানে তিরমিযী, হাদীছ নং (২৬১৮) , মান: ছহীহ।
তিরমিযী'র অন্য একটি বর্ণনাতে আছে: (([ ইমানদার] বান্দার মাঝে এবং শিরক বা কুফুরির মধ্যে পার্থক্য কারী হল নামাজ ত্যাগ))।
➡দেখুন: সুনানে তিরমিযী, হাদীছ নং (২৬১৯), মান : সহীহ।
🔷দ্বিতীয়ত: ইচ্ছাকৃতভাবে বা অলসতাপূর্বক নামাজ ত্যাগকারীর বিষয়ে মুসলিম উম্মাহর মাঝে অনুসরণীয় প্রসিদ্ধ চার ইমামের কড়া মন্তব্য:
1⃣হানাফী মাযহাবের জনক ইমাম ইমাম আবু হানীফা (রহঃ) এবং তার শাগরেদগণ (রহঃ) ইচ্ছাকৃতভাবে বা অলসতাপূর্বক নামাজ ত্যাগকারী কারী সম্পর্কে মন্তব্য করেছেন যে, সে হল মুসলিম সমাজের মধ্যে ফাসেকদের একজন এবং সে কবীরা গুনাহকারী।
➡দেখুন শারহু মুশকিলিল আ'ছার, (৮/২০৪)।
♻ইচ্ছাকৃতভাবে বা অলসতাপূর্বক নামাজ ত্যাগকারীর শাস্তি কী হবে সে সম্পর্কে হানাফী মাযহাবের বক্তব্য হল:- তাকে প্রচন্ড ভাবে প্রহার করতে হবে যেন তার দেহ থেকে রক্ত ঝরে পড়ে , এবং নামাজ না পড়া পর্যন্ত তাকে বন্দি করে রাখতে হবে।
➡দেখুন: নুরুল ই'যা'হ পৃঃ(৭৬)
2⃣মালেকী মাযহাবের জনক ইমাম মালেক (রহঃ) বলেছেন: ইচ্ছাকৃতভাবে বা অলসতাপূর্বক নামাজ ত্যাগকারী কাফের নয়, তবে নামাজ ত্যাগের শাস্তি স্বরূপ তাকে হত্যা করতে হবে। দেখুন: ইবনু রুশদ লিখিত আল মুকাদ্দিমাতুল মুমাহ্হিদাত, (১/১৪২); এবং কারা'ফী রচিত আয- যাখী'রা(২/৪৮২)।
3⃣শাফেঈ' মাযহাবের জনক ইমাম শাফেঈ' (রহঃ) বলেছেন: ইচ্ছাকৃতভাবে বা অলসতাপূর্বক নামাজ ত্যাগকারী কাফের নয়, তবে তার রক্ত বৈধ এবং নামাজ ত্যাগ করার শাস্তি স্বরূপ তাকে হত্যা করা ওয়াজিব।
দেখুন: মাওয়ারদীর লিখিত আল হাবী' আল কাবীর,(২/৫২৫)।
4⃣হাম্বলী মাযহাবের জনক ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল (রহঃ) বলেছেন: ইচ্ছাকৃতভাবে বা অলসতাপূর্বক নামাজ ত্যাগকারী কাফের এবং তাকে তার এ কুফুরির কারণে হত্যা করতে হবে। দেখুন: আল মুবদি' ফি শরহিল ভুকনি',(১/২৭১); আশ শারহুল মুমতি' আ'লা' যাদিল মুসতাকনি',(২/২৮)।
⚠️ইমামগণ যে শাস্তির কথা উল্লেখ করেছেন তা বাস্তবায়ন করবেন মুসলিম শাসকগণ। এ শাস্তি বাস্তবায়নের অধিকার সাধারণ মুসলামনদের নাই।
❇অতএব যারা ইচ্ছাকৃতভাবে বা অলসতাপূর্বক নামাজ ত্যাগের মতো জঘন্য অপরাধে নিমজ্জিত আছেন, তারা সাবধান হয়ে যান এবং এমন কঠিন পাপ থেকে আজ হতেই নিরত হয়ে যান।
আল্লাহ্ তুমি আমাদেরকে তাওফীক দান করো।
🖋শাইখ ইবনে আইয়ুব আল মাদানী।

Post a Comment