সালাতুত তওবার ফজিলত এবং নিয়ম করে প্রতিদিন সকালে ও রাতে তা আদায় করার বিধান


সালাতুত তওবার ফজিলত এবং নিয়ম করে প্রতিদিন সকালে ও রাতে তা আদায় করার বিধান
▬▬▬ ◈◉◈▬▬▬
প্রশ্ন: কারো যদি নির্দিষ্ট কোনো গুনাহের কথা মনে না থাকে তবুও যদি আমভাবে সকল ভুল-ত্রুটির জন্য ক্ষমা পাওয়ার উদ্দেশ্যে প্রতিদিন সকালে এবং রাতে সালাতুত তওবা পড়ে এবং এটাকে অভ্যাসে পরিণত করে তবে কি বিদআত হবে?

উত্তর:
গুনাহ মোচনের জন্য সালাতুত তওবা অত্যন্ত কার্যকরী একটি সালাত। আহলে ইলমগণ এ সালাত পড়ার বৈধতার ব্যাপারে একমত পোষণ করেছেন।
এ মর্মে বর্ণিত হয়েছে একাধিক হাদিস। যেমন:
♦১) আবু বকর রা. বলেন, আমি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে বলতে শুনেছি:
مَا مِنْ عَبْدٍ يُذْنِبُ ذَنْبًا فَيُحْسِنُ الطُّهُورَ ثُمَّ يَقُومُ فَيُصَلِّي رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ يَسْتَغْفِرُ اللَّهَ إِلاَّ غَفَرَ اللَّهُ لَهُ ‏"‏ ‏.‏ ثُمَّ قَرَأَ هَذِهِ الآيَةَ ‏{وَالَّذِينَ إِذَا فَعَلُوا فَاحِشَةً أَوْ ظَلَمُوا أَنْفُسَهُمْ ذَكَرُوا اللَّهَ ‏}‏ إِلَى آخِرِ الآيَةِ
"যখন কোনো বান্দা গুনাহ করার পর সুন্দরভাবে উযু করে দাঁড়িয়ে যায় এবং দু’ রাক‘আত সালাত আদায় করে অত:পর আল্লাহর নিকট গুনাহের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে তখন নিশ্চয়ই আল্লাহ তাকে ক্ষমা করেন।" (আল্লামা আলবানী সহীহ আবু দাউদে হাদিসটি সহীহ বলে আখ্যায়িত করেন।)

অতঃপর তিনি এ আয়াত তিলাওয়াত করেন: “এবং যখন তারা কোনো অন্যায় কাজ করে কিংবা নিজেদের উপর অত্যাচার করে আল্লাহকে স্বরণ করে.... আয়াতের শেষ পর্যন্ত।(সূরা আলে ‘ইমরান: ১৩৫)।

♦ ২) ইমাম তাবরানী কিতাব আল-কবিরে বিশুদ্ধ সনদে আবুদ্ দারদা রা. হতে একটি হাদিস বর্ণনা করেন, তাতে তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,

مَنْ تَوَضَّأَ فَأَحْسَنَ وُضُوءَهُ ثُمَّ قَامَ فَصَلَّى رَكْعَتَيْنِ أَوْ أَرْبَعًا (شك أحد الرواة) يُحْسِنُ فِيهِمَا الذِّكْرَ وَالْخُشُوعَ ، ثُمَّ اسْتَغْفَرَ اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ ، غَفَرَ لَهُ

“যে ব্যক্তি সুন্দর ভাবে ওজু করে দাঁড়িয়ে যায় এবং দুই বা চার রাকাত (এক বর্ণনাকারী সংখ্যার ব্যাপারে সন্দিহান) সালাত আদায় করে এবং তাতে সে ভালোভাবে রুকু ও সেজদা করে, তারপর আল্লাহ তা‘আলার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করে আল্লাহ তা‘আলা তাকে ক্ষমা করে দেন।"

এটাকেই সালাতুত তওবা বলা হয়। সুতরাং যে কোনো গুনাহ সংঘটিত হয়ে গেলে আমাদের কর্তব্য হবে, কাল বিলম্ব না করে সুন্দরভাবে ওযু করে একান্ত নিবিষ্টচিত্তে দু বা চার রাকআত সালাত আদায় করে মহান রবের দরবারে ক্ষমা প্রার্থনা করা। তাহলে আশা করা যায়, দয়াময় আল্লাহ আমাদের গুনাহগুলো ক্ষমা করবেন। নিশ্চয় তিনি পরম দয়ালু ও অতিশয় ক্ষমাশীল।

🌀 তবে প্রতিদিন সকালে বা রাতে বা অন্য একটি নির্দিষ্ট সময়ে নিয়মিতভাবে তা আদায় করা ঠিক নয়। কেননা আমাদের পূর্বসূরি তথা সাহাবী ও তাবেঈনের কেউ এমনটি করতেন বলে প্রমাণ পাওয়া যায় না। অথচ আল্লাহর নিকট ক্ষমা চাওয়া ক্ষেত্রে তারা ছিলেন আমাদের চেয়েও অধিক অগ্রগামী।
সুতরাং সালাতুত তওবা আদায় করার জন্য এভাবে নতুন নিয়ম চালু করা হলে তা বিদআতে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কেননা, যখন আপনি প্রতিদিন একটা নির্দিষ্ট সময়ে এ সালাত আদায় করবেন তখন স্বভাবতই প্রশ্ন সৃষ্টি হবে যে, এটা কি তাহলে নিয়মিত সুন্নত? নিয়মিত সুন্নত হলে তার দলিল কোথায়? আর যেহেতু নিয়মিত পড়ার দলিল নেই তাই এমনটি করা ঠিক হবে না। বরং যখনই কোনো গুনাহ সংঘটিত হবে তখনই তা পড়া উচিৎ। এটাই সঠিক নিয়ম।
আল্লাহ তাওফিক দান করুন। আমীন।
▬▬▬ ◈◉◈▬▬▬
উত্তর প্রদানে:
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল মাদানি
(লিসান্স, মদিনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়)
fb id: AbdullaahilHadi
দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ এন্ড গাইডেন্স সেন্টার, সউদী আরব

Post a Comment

[blogger][facebook][disqus]

MKRdezign

Contact Form

Name

Email *

Message *

Powered by Blogger.
Javascript DisablePlease Enable Javascript To See All Widget